ঢাকা ০৩:১৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
শিবগঞ্জ সীমান্তে ৬টি ভারতীয় চোরাই মোবাইলসহ আটক ১ রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসলাম কায়েম না হলে পরিপূর্ণ দ্বীন মানা সম্ভবত নয়, মাও: বোরহান উদ্দিন নির্বাচন-গণভোটের প্রস্তুতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করলেন সিইসি বরুড়ায় হানাদারমুক্ত দিবস পালিত ১২ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের আবেদন ট্রাইব্যুনালে অবৈধ আয়ে পরিচালিত রাজনীতি চাঁদাবাজিকে উৎসাহিত করে : পরিকল্পনা উপদেষ্টা জাপান–বাংলাদেশ সহযোগিতায় কার্বন বাজার প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে: পরিবেশ উপদেষ্টা আইএসইউর মানবিক উদ্যোগ: বরুড়ায় শীতবস্ত্র বিতরণ  নারায়নগঞ্জের ফতুল্লার ধর্মগঞ্জে বেগম জিয়ার রোগ মুক্তি ও সুস্থতা কামনায় মিলাদ ও দোয়া মাহফিল সেইভ আওয়ার উইমেন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম ডিভিশনের শীতবস্ত্র বিতরণ

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ মসজিদ ভেঙে বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের অভিযোগ

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ওয়াকফকৃত জমিতে ৩ যুগ আগে নির্মিত পাকা মসজিদ ভেঙে বাণিজ্যিক বহুতল ভবন নির্মাণ করার উদ্যোগ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিএনপি সমর্থক শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে। মসজিদটি পুন:নির্মাণ করার কথা বলে ভাঙা শুরু করা হয়। পরে নিজের জমি দাবি করে বাণিজ্যিক বহুতল ভবন নির্মাণ করার কথা বলায় এলাকার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম ক্ষোভ।  স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিদ্ধিরগঞ্জের সালুহাজী রোড এলাকায় নিজের ক্রয়কৃত জমিতে ৩ যুগ আগে বায়তুস সালাম জামে মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন ঢাকার সূত্রাপুর থানা এলাকার শিল্পপতি মরহুম হাজী সালাউদ্দিন মিয়া। পরে তিনি মসজিদের জন্য ৫ শতাংশ জমি ওয়াকফ করে দেন। ২০০২ সালের ৪ এপ্রিল ওয়াকফ নামা দলিলটি সম্পাদিত হয়। সালাউদ্দিন মিয়ার মৃত্যুর পর তার সন্তানেরা মসজিদের আশপাশের অধিকাংশ জমি বিক্রি করে দেন। এখনো কিছু জমি রয়ে গেছে। তবে তারা জমির কোন খোঁজ খবর রাখেন না। এ সুযোগে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের ম্যানেজ করে বিএনপি সমর্থক শহিদুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা ক্রয়সূত্রে মালিক দাবি করে মসজিদের জমি দখল করেন। স্থানীয় মার্কাজুল আজিজ মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল আজিজ বলেন, ওয়াকফকৃত জমিতে ৩ যুগ আগে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের পর শহিদুল ইসলাম মসজিদের আশপাশের খালি জামিতে দোকানপাট নির্মাণ করে ভাড়া দিয়ে নিজেই ভাড়া নিতেন। মসজিদ ভাঙা শুরু করার পর প্রকৃত উদ্দেশ্য জানতে পেরে আমিসহ স্থানীয় লোকজন গিয়ে বাধা দেই। দোকানপাটের ভাড়া কোন ব্যক্তি নয়, মসজিদের তহবিলে জমা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির গৃহায়ন ভূমি ও পুনর্বাসন সম্পাদক আবুল খায়ের শান্ত বলেন, মসজিদ ভেঙে জমি দখল করে যারা বাণিজ্যিক ভবণ নির্মাণ করার উদ্যোগ নিয়েছে তারা প্রকৃত মুসলমান হতে পারেনা। শহিদুল ইসলামের পেটে এত খিদা যে তিনি মসজিদের জমি দখল করে দোকানপাট নির্মাণ করে মাসে ৪৮ হাজার টাকা করে ভাড়া নিচ্ছেন। শুধু মসজিদের খালি জমি নয় তিনি মসজিদ ভেঙে সমস্ত জমি গ্রাস করতে চান। একজন মুসলমান হিসেবে আমরা তা হতে দেব না। স্থানীয় সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও বিএনপি নেতা ইকবাল হোসেন বলেন, মসজিদের জমিটি ওয়াক্ফকৃত। এটা ব্যক্তি মালিকানা জমি না। ৩ যুগ ধরে এ মসজিদে এলাকার মুসল্লিরা ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে আসছে। মসজিদ ভাঙার খবর পেয়ে সরেজমিনে গিয়েছিলাম। মসজিদের জমি বাদে ভবন নির্মাণ করার কথা বলে আসছি। মসজিদের জমিতে ভবন নির্মাণ করতে দেওয়া হবে না। মরহুম সালাউদ্দিন মিয়ার ছেলে জসিম মিয়া বলেন, বহুবছর আগে আমার বাবা নিজ অর্থায়নে দ্বিতীয় তলা মসজিদ নির্মাণ করে দুটি দলিলে ৭ শতাংশ জমি ওয়াকফ করে দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের দোসর শহিদুল ইসলামসহ সঙ্গবদ্ধ একটি ভূমিদস্যু চক্র মসজিদ ভেঙে জমি দখল করে বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করার চেষ্টা করছে বলে জানতে পেরেছি। ব্যস্থতার কারণে আমি নিজে যেতে পারছিনা। স্থানীয় কয়েকজন গণমাণ্য ব্যক্তিদের দায়িত্ব দিয়েছি তারা যেন মসজিদের জমি রক্ষা করার উদ্যোগ নেন। শহিদুল ইসলাম বলেন, আমি ক্রয়সূত্রে এ জমির মালিক। এখানে একটি বহুতল ভবন নির্মাণ করা হবে। তবে নিচ ও দ্বিতীয় তলাটি মসজিদ হিসেবেই থাকবে। মসজিদের দেখা শোনা আমিই করবো। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি শাহিনূর আলম বলেন, মসজিদ ভেঙে ফেলার বিষয়ে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে একজন অভিযোগ করতে এসেছিল। তখন অন্য পক্ষও থানা আসেন। এসময় উভয় পক্ষ আমার কাছে আসলে স্থানীয়ভাবে মিলে মসজিদ উন্নয়নের জন্য কাজ করতে উভয় পক্ষকে বলে দিয়েছি। বাংলাদেশ ওয়াকফ প্রশাসক(যুগ্ন সচিব) নূর-ই-আলম ও উপ প্রশাসক (উপসচিব) মো. মেহেদী হাসানের ব্যবহৃত মোঠো ফোনে একাধিকবার ফোন করলে রিং হলেও তারা রিসিভ করেন নি।

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

জনপ্রিয় সংবাদ

শিবগঞ্জ সীমান্তে ৬টি ভারতীয় চোরাই মোবাইলসহ আটক ১

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ মসজিদ ভেঙে বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৭:৫৪:২৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ওয়াকফকৃত জমিতে ৩ যুগ আগে নির্মিত পাকা মসজিদ ভেঙে বাণিজ্যিক বহুতল ভবন নির্মাণ করার উদ্যোগ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিএনপি সমর্থক শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে। মসজিদটি পুন:নির্মাণ করার কথা বলে ভাঙা শুরু করা হয়। পরে নিজের জমি দাবি করে বাণিজ্যিক বহুতল ভবন নির্মাণ করার কথা বলায় এলাকার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম ক্ষোভ।  স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিদ্ধিরগঞ্জের সালুহাজী রোড এলাকায় নিজের ক্রয়কৃত জমিতে ৩ যুগ আগে বায়তুস সালাম জামে মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন ঢাকার সূত্রাপুর থানা এলাকার শিল্পপতি মরহুম হাজী সালাউদ্দিন মিয়া। পরে তিনি মসজিদের জন্য ৫ শতাংশ জমি ওয়াকফ করে দেন। ২০০২ সালের ৪ এপ্রিল ওয়াকফ নামা দলিলটি সম্পাদিত হয়। সালাউদ্দিন মিয়ার মৃত্যুর পর তার সন্তানেরা মসজিদের আশপাশের অধিকাংশ জমি বিক্রি করে দেন। এখনো কিছু জমি রয়ে গেছে। তবে তারা জমির কোন খোঁজ খবর রাখেন না। এ সুযোগে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের ম্যানেজ করে বিএনপি সমর্থক শহিদুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা ক্রয়সূত্রে মালিক দাবি করে মসজিদের জমি দখল করেন। স্থানীয় মার্কাজুল আজিজ মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল আজিজ বলেন, ওয়াকফকৃত জমিতে ৩ যুগ আগে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের পর শহিদুল ইসলাম মসজিদের আশপাশের খালি জামিতে দোকানপাট নির্মাণ করে ভাড়া দিয়ে নিজেই ভাড়া নিতেন। মসজিদ ভাঙা শুরু করার পর প্রকৃত উদ্দেশ্য জানতে পেরে আমিসহ স্থানীয় লোকজন গিয়ে বাধা দেই। দোকানপাটের ভাড়া কোন ব্যক্তি নয়, মসজিদের তহবিলে জমা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির গৃহায়ন ভূমি ও পুনর্বাসন সম্পাদক আবুল খায়ের শান্ত বলেন, মসজিদ ভেঙে জমি দখল করে যারা বাণিজ্যিক ভবণ নির্মাণ করার উদ্যোগ নিয়েছে তারা প্রকৃত মুসলমান হতে পারেনা। শহিদুল ইসলামের পেটে এত খিদা যে তিনি মসজিদের জমি দখল করে দোকানপাট নির্মাণ করে মাসে ৪৮ হাজার টাকা করে ভাড়া নিচ্ছেন। শুধু মসজিদের খালি জমি নয় তিনি মসজিদ ভেঙে সমস্ত জমি গ্রাস করতে চান। একজন মুসলমান হিসেবে আমরা তা হতে দেব না। স্থানীয় সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও বিএনপি নেতা ইকবাল হোসেন বলেন, মসজিদের জমিটি ওয়াক্ফকৃত। এটা ব্যক্তি মালিকানা জমি না। ৩ যুগ ধরে এ মসজিদে এলাকার মুসল্লিরা ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে আসছে। মসজিদ ভাঙার খবর পেয়ে সরেজমিনে গিয়েছিলাম। মসজিদের জমি বাদে ভবন নির্মাণ করার কথা বলে আসছি। মসজিদের জমিতে ভবন নির্মাণ করতে দেওয়া হবে না। মরহুম সালাউদ্দিন মিয়ার ছেলে জসিম মিয়া বলেন, বহুবছর আগে আমার বাবা নিজ অর্থায়নে দ্বিতীয় তলা মসজিদ নির্মাণ করে দুটি দলিলে ৭ শতাংশ জমি ওয়াকফ করে দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের দোসর শহিদুল ইসলামসহ সঙ্গবদ্ধ একটি ভূমিদস্যু চক্র মসজিদ ভেঙে জমি দখল করে বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করার চেষ্টা করছে বলে জানতে পেরেছি। ব্যস্থতার কারণে আমি নিজে যেতে পারছিনা। স্থানীয় কয়েকজন গণমাণ্য ব্যক্তিদের দায়িত্ব দিয়েছি তারা যেন মসজিদের জমি রক্ষা করার উদ্যোগ নেন। শহিদুল ইসলাম বলেন, আমি ক্রয়সূত্রে এ জমির মালিক। এখানে একটি বহুতল ভবন নির্মাণ করা হবে। তবে নিচ ও দ্বিতীয় তলাটি মসজিদ হিসেবেই থাকবে। মসজিদের দেখা শোনা আমিই করবো। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি শাহিনূর আলম বলেন, মসজিদ ভেঙে ফেলার বিষয়ে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে একজন অভিযোগ করতে এসেছিল। তখন অন্য পক্ষও থানা আসেন। এসময় উভয় পক্ষ আমার কাছে আসলে স্থানীয়ভাবে মিলে মসজিদ উন্নয়নের জন্য কাজ করতে উভয় পক্ষকে বলে দিয়েছি। বাংলাদেশ ওয়াকফ প্রশাসক(যুগ্ন সচিব) নূর-ই-আলম ও উপ প্রশাসক (উপসচিব) মো. মেহেদী হাসানের ব্যবহৃত মোঠো ফোনে একাধিকবার ফোন করলে রিং হলেও তারা রিসিভ করেন নি।