ঢাকা ০৯:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বিজিবির বিশেষ অভিযানে ১০ হাজার ইয়াবাসহ এক পাচারকারী আটক ঐক্যের সেই সুর এখন কতদূর ? যশোরে ৪টি আসনে ধানের শীষ প্রার্থীর পক্ষে নেই বঞ্চিতরা মদনপুরে ভুয়া পুলিশ পরিচয়ে ট্রাকচালকের কাছ থেকে টাকা দাবি: অভিযোগে যুবক আটক টেকনাফে র‌্যাবের অভিযানে এক লক্ষ ইয়াবা উদ্ধার, আটক ২ শিগগিরই ফিরবেন তারেক রহমান, সেদিন দেশ যেন কেঁপে ওঠে: মির্জা ফখরুল বিয়ে-তালাকের সব তথ্য ডিজিটালি নিবন্ধনের নির্দেশ তফসিল ঘোষণার পর সারা দেশে নামছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শরীফ হত্যা মামলার হোতা করিম র‌্যাবের অভিযানে গ্রেফতার বিশ্ব মানবাধিকার দিবসে হিউম্যান এইড ইন্টারন্যাশনাল নাঃগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে জেলার বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করেন ডিসি রায়হান কবির।

আনুষ্ঠানিকভাবে যমুনা রেলসেতু উদ্বোধন

  • প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৫:৪৬:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫
  • ৮০ বার পড়া হয়েছে

 
আনুষ্ঠানিকভাবে যমুনা রেলসেতু উদ্বোধন

স্টাফ রিপোর্টারঃ দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর যমুনা নদীর ওপর নির্মিত দেশের দীর্ঘতম রেল সেতুর আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়েছে।
মঙ্গলবার বেলা ১২টায় রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ফাহিমুল ইসলাম যমুনা রেল সেতুর উদ্বোধন করেন।
বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক এম আফজাল হোসেনের সভাপতিত্ব উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচি এবং জাপানের বৈদেশিক উন্নয়ন সংস্থা জাইকার দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক মহা-পরিচালক ইতো তেরুয়ুকি।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মাসুদুর রহমান।
এ রেলওয়ে সেতু পার হতে লাগবে তিন থেকে পাঁচ মিনিট; যা উত্তরাঞ্চলসহ দেশের যোগাযোগ, বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ সেতুর ফলে উত্তর-দক্ষিণ ও পশ্চিম অঞ্চলের সঙ্গে ঢাকার রেল যোগাযোগ আরও সহজ হবে। এতে বাংলাদেশ সম্ভাবনাময় অগ্রযাত্রার আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল।

যমুনা নদীতে বর্তমান সড়ক সেতুর পাশে নতুন এই রেলসেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। ঢাকার সঙ্গে সরাসরি রেলপথে উত্তর-দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগের সেতুবন্ধন এই সেতু উদ্বোধনে খুশি স্থানীয়সহ রেলযাত্রীরাও। তবে ডাবল লেনের হলেও বর্তমানে সিঙ্গেল লেন চালু হওয়ায় সেতুটির পুরোপুরি সুফল সহসাই মিলবে না যাত্রীদের।

সেতুটি ৫০টি পিলার এবং ৪৯টি স্প্যানের ওপর নির্মিত। নতুন রেলওয়ে সেতুটি যমুনা বহুমুখী সেতুর ৩০০ মিটার উজানে অবস্থিত। দেশের দীর্ঘতম ও আধুনিক এই সেতুর ওপর দিয়ে ৮৮টি ট্রেন দ্রুতগতিতে চলাচল করতে পারবে। ১৯৯৮ সালে যমুনা বহুমুখী সেতু উদ্বোধনের পর থেকে প্রায় ৩৮টি ট্রেন প্রতিদিন তুলনামূলকভাবে ধীর গতিতে যাতায়াত করে।

১২ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী থেকে সিল্ক সিটি এক্সপ্রেস ট্রেন প্রথমবারের মতো যাত্রী নিয়ে যমুনা রেল সেতু পার হয়ে ঢাকায় পৌঁছায়। পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালানোর সময় একটি ট্রেন ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে সেতুটি অতিক্রম করেছিল। এতে সেতুটি পারি হতে সময় লেগেছিলো প্রায় সাড়ে ৩ মিনিট৷

সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১৬ হাজার ৭৮০ দশমিক ৯৬ কোটি টাকা। যার ৭২ দশমিক ৪ শতাংশ ঋণ হিসেবে দিয়েছে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) এবং বাকি অর্থ সরকার দিয়েছে। জাপানের ওটিজি এবং আইএইচআই যৌথভাবে সেতুটি নির্মাণ করেছে।

২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি এই সেতুর নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০২১ সালের মার্চে পিলার নির্মাণের জন্য পাইলিং কাজ শুরু হয়। ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই রেল সেতু দেশের দীর্ঘতম প্রথম ডাবল ট্র্যাকের ডুয়েল গেজের সেতু।
একসময় প্রমত্তা যমুনা উত্তরাঞ্চলকে রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের শিল্পোসমৃদ্ধ জেলাগুলো থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিল।

রাজধানীর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতার কারণে উত্তরের জনপদগুলো ছিল অবহেলিত ও উন্নয়ন বঞ্চিত। যমুনা বহুমুখী সেতু নির্মাণের মাধ্যমে ঢাকার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ চালু হলে পরিবর্তন আসতে থাকে এসব জনপদের। উন্নয়নের ছোঁয়ায় পাল্টে যেতে থাকে উত্তরের জেলাগুলো।

তবে ওই সেতুতে রেল যোগাযোগ চালু করা হলেও সেটা ছিল চরম বিড়ম্বনার। যাত্রীবাহী ট্রেন চললেও সেতু পার হতে তিন-চার গুণ বেশি সময় লাগত। ২০০৮ সালে মূল সেতুতে ফাটল দেখা দেওয়ায় ট্রেনের গতি আরও কমিয়ে ঘণ্টায় মাত্র ২০ কিলোমিটার করা হয়। এসব সমস্যা সমাধানে সরকার যমুনা নদীর ওপর আলাদা রেল সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার।

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

জনপ্রিয় সংবাদ

বিজিবির বিশেষ অভিযানে ১০ হাজার ইয়াবাসহ এক পাচারকারী আটক

আনুষ্ঠানিকভাবে যমুনা রেলসেতু উদ্বোধন

আপডেট সময় : ০৫:৪৬:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫

 
আনুষ্ঠানিকভাবে যমুনা রেলসেতু উদ্বোধন

স্টাফ রিপোর্টারঃ দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর যমুনা নদীর ওপর নির্মিত দেশের দীর্ঘতম রেল সেতুর আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়েছে।
মঙ্গলবার বেলা ১২টায় রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ফাহিমুল ইসলাম যমুনা রেল সেতুর উদ্বোধন করেন।
বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক এম আফজাল হোসেনের সভাপতিত্ব উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচি এবং জাপানের বৈদেশিক উন্নয়ন সংস্থা জাইকার দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক মহা-পরিচালক ইতো তেরুয়ুকি।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মাসুদুর রহমান।
এ রেলওয়ে সেতু পার হতে লাগবে তিন থেকে পাঁচ মিনিট; যা উত্তরাঞ্চলসহ দেশের যোগাযোগ, বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ সেতুর ফলে উত্তর-দক্ষিণ ও পশ্চিম অঞ্চলের সঙ্গে ঢাকার রেল যোগাযোগ আরও সহজ হবে। এতে বাংলাদেশ সম্ভাবনাময় অগ্রযাত্রার আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল।

যমুনা নদীতে বর্তমান সড়ক সেতুর পাশে নতুন এই রেলসেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। ঢাকার সঙ্গে সরাসরি রেলপথে উত্তর-দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগের সেতুবন্ধন এই সেতু উদ্বোধনে খুশি স্থানীয়সহ রেলযাত্রীরাও। তবে ডাবল লেনের হলেও বর্তমানে সিঙ্গেল লেন চালু হওয়ায় সেতুটির পুরোপুরি সুফল সহসাই মিলবে না যাত্রীদের।

সেতুটি ৫০টি পিলার এবং ৪৯টি স্প্যানের ওপর নির্মিত। নতুন রেলওয়ে সেতুটি যমুনা বহুমুখী সেতুর ৩০০ মিটার উজানে অবস্থিত। দেশের দীর্ঘতম ও আধুনিক এই সেতুর ওপর দিয়ে ৮৮টি ট্রেন দ্রুতগতিতে চলাচল করতে পারবে। ১৯৯৮ সালে যমুনা বহুমুখী সেতু উদ্বোধনের পর থেকে প্রায় ৩৮টি ট্রেন প্রতিদিন তুলনামূলকভাবে ধীর গতিতে যাতায়াত করে।

১২ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী থেকে সিল্ক সিটি এক্সপ্রেস ট্রেন প্রথমবারের মতো যাত্রী নিয়ে যমুনা রেল সেতু পার হয়ে ঢাকায় পৌঁছায়। পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালানোর সময় একটি ট্রেন ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে সেতুটি অতিক্রম করেছিল। এতে সেতুটি পারি হতে সময় লেগেছিলো প্রায় সাড়ে ৩ মিনিট৷

সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১৬ হাজার ৭৮০ দশমিক ৯৬ কোটি টাকা। যার ৭২ দশমিক ৪ শতাংশ ঋণ হিসেবে দিয়েছে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) এবং বাকি অর্থ সরকার দিয়েছে। জাপানের ওটিজি এবং আইএইচআই যৌথভাবে সেতুটি নির্মাণ করেছে।

২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি এই সেতুর নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০২১ সালের মার্চে পিলার নির্মাণের জন্য পাইলিং কাজ শুরু হয়। ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই রেল সেতু দেশের দীর্ঘতম প্রথম ডাবল ট্র্যাকের ডুয়েল গেজের সেতু।
একসময় প্রমত্তা যমুনা উত্তরাঞ্চলকে রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের শিল্পোসমৃদ্ধ জেলাগুলো থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিল।

রাজধানীর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতার কারণে উত্তরের জনপদগুলো ছিল অবহেলিত ও উন্নয়ন বঞ্চিত। যমুনা বহুমুখী সেতু নির্মাণের মাধ্যমে ঢাকার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ চালু হলে পরিবর্তন আসতে থাকে এসব জনপদের। উন্নয়নের ছোঁয়ায় পাল্টে যেতে থাকে উত্তরের জেলাগুলো।

তবে ওই সেতুতে রেল যোগাযোগ চালু করা হলেও সেটা ছিল চরম বিড়ম্বনার। যাত্রীবাহী ট্রেন চললেও সেতু পার হতে তিন-চার গুণ বেশি সময় লাগত। ২০০৮ সালে মূল সেতুতে ফাটল দেখা দেওয়ায় ট্রেনের গতি আরও কমিয়ে ঘণ্টায় মাত্র ২০ কিলোমিটার করা হয়। এসব সমস্যা সমাধানে সরকার যমুনা নদীর ওপর আলাদা রেল সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার।