ঢাকা ০২:০১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
নারায়ণগঞ্জে নিরাপত্তা প্রহরী হত্যা মামলার অন্যতম আসামি পটুয়াখালী থেকে গ্রেপ্তার র‍্যাব-১১ এর তৎপরতায় অবৈধ পলিথিন কারখানায় মোবাইল কোর্টের অভিযান বিজিবির অভিযানে চোলাই মদসহ দুই পাচারকারী আটক কুমিল্লার গোমতীর চরে সারি সারি ফুলকপির গাছ কিছু বিষয়ে উচ্চ আদালতের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে : আসিফ নজরুল গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে মনেপ্রাণে ধারণকারীদের ঐক‍্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম গঠনের তাগিদ এবি পার্টির চাঁপাইনবাবগঞ্জে সড়ক দূর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত (নিহত) পরিবারের মাঝে চেক হস্তান্তর পল্লীবন্ধু এরশাদের হাতে গড়া উপজেলা পরিষদের পরিপূর্ণ বাস্তবায়নের দাবিতে সুনামগঞ্জে গণমমিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত সিদ্ধিরগঞ্জে ২০০ পিস ইয়াবাসহ এক মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার গাজার ত্রাণে বাধা না দিতে ইসরায়েলকে নির্দেশ আইসিজের

গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে মনেপ্রাণে ধারণকারীদের ঐক‍্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম গঠনের তাগিদ এবি পার্টির

  • প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:২৮:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫
  • ৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে মনেপ্রাণে ধারণকারীদের ঐক‍্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম গঠনের তাগিদ জানিয়েছে এবি পার্টি।ক্ষমতা নয় জুলাই আকাঙ্খার বাস্তবায়নই রাজনৈতিক দলগুলোর প্রধান ফোকাস হওয়া উচিৎ নইলে অভ্যুত্থানে জীবনও অঙ্গহানির শিকার হয়েছেন তারা ক্ষমা করবেন না। রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় বক্তারা এমন কথা বলেন।

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) রাজধানীর ফারইস্ট মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এমন কথা বলেন।

আমার বাংলাদেশ পার্টি-এবি পার্টি এবং রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম ইউনাইটেড পিপলস-আপ বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি হাসনাত কাইয়ুম, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস ফ্যাকাল্টির ডিন অধ্যাপক ড. ওয়ারেসুল করিম বুলবুল, আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলি আহসান জুনায়েদ, এবি পার্টির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. মেজর (অব) আব্দুল ওহাব মিনার, সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, আপ বাংলাদেশের সদস্য সচিব আরেফিন হিজবুল্লাহ, প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসরিন সুলতানা মিলি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নেতা দিদার ভুইয়া প্রমুখ।

মাহমুদুর রহমান তার বক্তব্যের শুরুতে কিশোর জুলাই শহীদ আনাসের চিঠি পাঠ করে শোনান। তিনি বলেন, শহীদ আনাসসহ হাজারো শহীদ শুধু ক্ষমতা পরিবর্তনের জন্য জীবন দেয় নাই। বড় রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের প্রতিষ্ঠিত ক্ষমতা কাঠামো হারানোর ভয়ে জুলাইকে বিপ্লব না বলে শুধু আন্দোলন বলে থাকে। অথচ শহীদদের আত্মত্যাগ আর জনতার অকুণ্ঠ সমর্থনকে সরকারের বৈধতার সিঁড়ি মনে না করে ১০৬ অনুচ্ছেদকে ভিত্তি মনে করা হচ্ছে।

গত কয়েকদিনে সরকার প্রধানের সঙ্গে নির্বাচনকালীন প্রশাসন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনায় বিস্ময় প্রকাশ করে তিনি বলেন, যেনতেন নির্বাচনই বড় রাজনৈতিক দলের লক্ষ্য।

তিনি বলেন, জুলাই যোদ্ধাদের লড়াই শেষ হয়নি, নির্বাচনের পরই সব সমাধান হয়ে যাবে মনে করা বোকামি হবে। আগামীতেও গণমাধ্যমকে শাসকের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

সভাপতির বক্তব্যে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, জুলাইয়ের সবি শক্তিকে ভুল সংশোধন করে আবার রাজপথে নামতে হবে। আবু সাঈদ যেজন্য জীবন দিয়েছে সেটি ধরে রেখে নতুন লড়াই শুরুর ঘোষণা দেন তিনি। রাজনৈতিক দলগুলোকে গত ১৭ বছরের লড়াই স্মরণ করিয়ে দেন তিনি।

হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ক্ষমতা আর জনতাকে আলাদা করার সুযোগ নাই, জনগণের কাছেই ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে হবে।

তিনি বলেন, এবারের নির্বাচন সাধারণ নির্বাচন নয়, ৪৬ বা ৭০ সালের মত এই নির্বাচন ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণ নির্বাচনের মত এবার যেন টাকার খেলা না হয়, এবার জনগণকে দেশপ্রেমের পরীক্ষা দিতে হবে। অভ্যুত্থানের অনেক নেতা বিলাসী জীবন বেছে নিয়েছে। অথচ বিপ্লব আর বিলাস কখনো এক হতে পারে না। বিপ্লব আর যেন বেহাত না হয় সেজন্য জনগণকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত অভ্যুত্থান শেষ হতে পারে না। একক নেতা নয় বরং বহু মত পথের মানুষ জুলাই অভ্যুত্থানের চালিকাশক্তি।

ড. ওয়ারেসুল করিম বুলবুল বলেন, এই আয়োজন মাইলফলক হবে যদি, জনতামুখী জোট করা যায়।

আলি আহসান জুনায়েদ বলেন, ক্ষমতা ভাগাভাগির দৌড় অভ্যুত্থানকে ভুলিয়ে দিচ্ছে। অথচ হাসিনার ক্ষমতাকে দেবত্ব দেওয়ার প্রতিবাদে দেশবাসী মাঠে নেমেছিল। ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত রাখার প্রতিবাদেই জুলাই অভ্যুত্থান হয়েছিল। ফ্যাসিবাদী কাঠামো এখনো বহাল আছে, অথচ শুধু ক্ষমতার দৌড়ই অনেক রাজনৈতিক দলের লক্ষ্যবস্তু হয়ে পড়ছে। জনগণের কাছে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়াই অভ্যুত্থানের আসল চেতনা, আর কখনো ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা ফিরতে দেওয়া হবে না বলে প্রত্যয় জানান তিনি।

ডা. আব্দুল ওহাব মিনার বলেন, অভ্যুত্থানপন্থি সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।

আরেফিন হিজবুল্লাহ বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের মূলে ছিল ফ্যাসিস্ট হাসিনার জিহ্বা। হাসিনার কথা শুরু হলে মনে হত, এসব শোনার চেয়ে আমাজন জঙ্গলে বসবাস করা ভালো। আমলাতান্ত্রিক জমিদারি এখনো বহাল আছে, এটা অভ্যুত্থানের বাস্তবতা নয়। তিনি বলেন, জনতার ক্ষমতায়নই হবে জুলাই অভ্যুত্থানের মূল কথা।

রাফে সালমান রিফাত বলেন, অভ্যুত্থানের অনেক সহযোগী অনেকে পুরোনো ধাঁচের রাজনৈতিক খেলায় ডুবে গেছে। রাতের আঁধারে কারো বাসায় বসে নির্বাচনী আসন নিয়ে সমঝোতার চেষ্টা গণঅভ্যুত্থানের চেতনা হতে পারে না।

সমাবেশের শুরুতে মজিবুর রহমান মঞ্জু তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে বহু নতুন নতুন স্লোগান সংগ্রামী জনতার কণ্ঠে জাগরণ এনেছিল। তার মধ‍্যে একটি স্লোগান নতুন করে মানসপটে খুব রেখাপাত করেছিল, সেটা হলো ‘ক্ষমতা না জনতা- জনতা জনতা।’

ফ্যাসিবাদী শাসকগোষ্ঠী যে কোনো গণআন্দোলন দমন করার জন্য প্রায়ই একটি কৌশল অবলম্বন করে থাকে; সেটি হলো ক্ষমতার লোভ দেখিয়ে আন্দোলনের শক্তিগুলোকে বিভক্ত করা। নেতৃত্বের কাউকে কাউকে এমপি, মন্ত্রী পদে পদায়ন অথবা নগদ টাকার প্রলোভন দেখিয়ে সংগ্রামের পথ থেকে সরিয়ে নিজেদের দালাল বানানো। বিএনপির পদত্যাগী নেতা শাহজাহান ওমর, কল‍্যাণ পার্টির নেতা মেজর জেনারেল (অব.) ইব্রাহিমের মত আরও অনেকে সে ধরনের পথে হেঁটেছেন এবং হাঁটতে উদ্যত হয়েছিলেন। সে সময় রাজপথে জনতার বজ্রকণ্ঠের আওয়াজ “ক্ষমতা না জনতা- জনতা জনতা” ছিল খুবই তাৎপর্যবহ। দেশ আসলে তখন থেকেই দু-ভাগে ভাগ হয়েছিল; একদিকে অবৈধভাবে দখল করা ‘ক্ষমতা’ অন‍্যদিকে আপসহীন লড়াকুদের ঐক্যবদ্ধ শক্তি ‘জনতা’। পৃথিবীর তাবৎ ইতিহাসে রক্তঝরা সংগ্রাম পেরিয়ে শেষমেষ জনতারই জয় হয় এবং বাংলাদেশে জুলাই অভ্যুত্থানে সেটাই আবারও বাস্তব হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।

 

 

 

 

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

জনপ্রিয় সংবাদ

নারায়ণগঞ্জে নিরাপত্তা প্রহরী হত্যা মামলার অন্যতম আসামি পটুয়াখালী থেকে গ্রেপ্তার

গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে মনেপ্রাণে ধারণকারীদের ঐক‍্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম গঠনের তাগিদ এবি পার্টির

আপডেট সময় : ১০:২৮:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে মনেপ্রাণে ধারণকারীদের ঐক‍্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম গঠনের তাগিদ জানিয়েছে এবি পার্টি।ক্ষমতা নয় জুলাই আকাঙ্খার বাস্তবায়নই রাজনৈতিক দলগুলোর প্রধান ফোকাস হওয়া উচিৎ নইলে অভ্যুত্থানে জীবনও অঙ্গহানির শিকার হয়েছেন তারা ক্ষমা করবেন না। রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় বক্তারা এমন কথা বলেন।

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) রাজধানীর ফারইস্ট মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এমন কথা বলেন।

আমার বাংলাদেশ পার্টি-এবি পার্টি এবং রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম ইউনাইটেড পিপলস-আপ বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি হাসনাত কাইয়ুম, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস ফ্যাকাল্টির ডিন অধ্যাপক ড. ওয়ারেসুল করিম বুলবুল, আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলি আহসান জুনায়েদ, এবি পার্টির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. মেজর (অব) আব্দুল ওহাব মিনার, সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, আপ বাংলাদেশের সদস্য সচিব আরেফিন হিজবুল্লাহ, প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসরিন সুলতানা মিলি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নেতা দিদার ভুইয়া প্রমুখ।

মাহমুদুর রহমান তার বক্তব্যের শুরুতে কিশোর জুলাই শহীদ আনাসের চিঠি পাঠ করে শোনান। তিনি বলেন, শহীদ আনাসসহ হাজারো শহীদ শুধু ক্ষমতা পরিবর্তনের জন্য জীবন দেয় নাই। বড় রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের প্রতিষ্ঠিত ক্ষমতা কাঠামো হারানোর ভয়ে জুলাইকে বিপ্লব না বলে শুধু আন্দোলন বলে থাকে। অথচ শহীদদের আত্মত্যাগ আর জনতার অকুণ্ঠ সমর্থনকে সরকারের বৈধতার সিঁড়ি মনে না করে ১০৬ অনুচ্ছেদকে ভিত্তি মনে করা হচ্ছে।

গত কয়েকদিনে সরকার প্রধানের সঙ্গে নির্বাচনকালীন প্রশাসন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনায় বিস্ময় প্রকাশ করে তিনি বলেন, যেনতেন নির্বাচনই বড় রাজনৈতিক দলের লক্ষ্য।

তিনি বলেন, জুলাই যোদ্ধাদের লড়াই শেষ হয়নি, নির্বাচনের পরই সব সমাধান হয়ে যাবে মনে করা বোকামি হবে। আগামীতেও গণমাধ্যমকে শাসকের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

সভাপতির বক্তব্যে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, জুলাইয়ের সবি শক্তিকে ভুল সংশোধন করে আবার রাজপথে নামতে হবে। আবু সাঈদ যেজন্য জীবন দিয়েছে সেটি ধরে রেখে নতুন লড়াই শুরুর ঘোষণা দেন তিনি। রাজনৈতিক দলগুলোকে গত ১৭ বছরের লড়াই স্মরণ করিয়ে দেন তিনি।

হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ক্ষমতা আর জনতাকে আলাদা করার সুযোগ নাই, জনগণের কাছেই ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে হবে।

তিনি বলেন, এবারের নির্বাচন সাধারণ নির্বাচন নয়, ৪৬ বা ৭০ সালের মত এই নির্বাচন ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণ নির্বাচনের মত এবার যেন টাকার খেলা না হয়, এবার জনগণকে দেশপ্রেমের পরীক্ষা দিতে হবে। অভ্যুত্থানের অনেক নেতা বিলাসী জীবন বেছে নিয়েছে। অথচ বিপ্লব আর বিলাস কখনো এক হতে পারে না। বিপ্লব আর যেন বেহাত না হয় সেজন্য জনগণকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত অভ্যুত্থান শেষ হতে পারে না। একক নেতা নয় বরং বহু মত পথের মানুষ জুলাই অভ্যুত্থানের চালিকাশক্তি।

ড. ওয়ারেসুল করিম বুলবুল বলেন, এই আয়োজন মাইলফলক হবে যদি, জনতামুখী জোট করা যায়।

আলি আহসান জুনায়েদ বলেন, ক্ষমতা ভাগাভাগির দৌড় অভ্যুত্থানকে ভুলিয়ে দিচ্ছে। অথচ হাসিনার ক্ষমতাকে দেবত্ব দেওয়ার প্রতিবাদে দেশবাসী মাঠে নেমেছিল। ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত রাখার প্রতিবাদেই জুলাই অভ্যুত্থান হয়েছিল। ফ্যাসিবাদী কাঠামো এখনো বহাল আছে, অথচ শুধু ক্ষমতার দৌড়ই অনেক রাজনৈতিক দলের লক্ষ্যবস্তু হয়ে পড়ছে। জনগণের কাছে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়াই অভ্যুত্থানের আসল চেতনা, আর কখনো ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা ফিরতে দেওয়া হবে না বলে প্রত্যয় জানান তিনি।

ডা. আব্দুল ওহাব মিনার বলেন, অভ্যুত্থানপন্থি সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।

আরেফিন হিজবুল্লাহ বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের মূলে ছিল ফ্যাসিস্ট হাসিনার জিহ্বা। হাসিনার কথা শুরু হলে মনে হত, এসব শোনার চেয়ে আমাজন জঙ্গলে বসবাস করা ভালো। আমলাতান্ত্রিক জমিদারি এখনো বহাল আছে, এটা অভ্যুত্থানের বাস্তবতা নয়। তিনি বলেন, জনতার ক্ষমতায়নই হবে জুলাই অভ্যুত্থানের মূল কথা।

রাফে সালমান রিফাত বলেন, অভ্যুত্থানের অনেক সহযোগী অনেকে পুরোনো ধাঁচের রাজনৈতিক খেলায় ডুবে গেছে। রাতের আঁধারে কারো বাসায় বসে নির্বাচনী আসন নিয়ে সমঝোতার চেষ্টা গণঅভ্যুত্থানের চেতনা হতে পারে না।

সমাবেশের শুরুতে মজিবুর রহমান মঞ্জু তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে বহু নতুন নতুন স্লোগান সংগ্রামী জনতার কণ্ঠে জাগরণ এনেছিল। তার মধ‍্যে একটি স্লোগান নতুন করে মানসপটে খুব রেখাপাত করেছিল, সেটা হলো ‘ক্ষমতা না জনতা- জনতা জনতা।’

ফ্যাসিবাদী শাসকগোষ্ঠী যে কোনো গণআন্দোলন দমন করার জন্য প্রায়ই একটি কৌশল অবলম্বন করে থাকে; সেটি হলো ক্ষমতার লোভ দেখিয়ে আন্দোলনের শক্তিগুলোকে বিভক্ত করা। নেতৃত্বের কাউকে কাউকে এমপি, মন্ত্রী পদে পদায়ন অথবা নগদ টাকার প্রলোভন দেখিয়ে সংগ্রামের পথ থেকে সরিয়ে নিজেদের দালাল বানানো। বিএনপির পদত্যাগী নেতা শাহজাহান ওমর, কল‍্যাণ পার্টির নেতা মেজর জেনারেল (অব.) ইব্রাহিমের মত আরও অনেকে সে ধরনের পথে হেঁটেছেন এবং হাঁটতে উদ্যত হয়েছিলেন। সে সময় রাজপথে জনতার বজ্রকণ্ঠের আওয়াজ “ক্ষমতা না জনতা- জনতা জনতা” ছিল খুবই তাৎপর্যবহ। দেশ আসলে তখন থেকেই দু-ভাগে ভাগ হয়েছিল; একদিকে অবৈধভাবে দখল করা ‘ক্ষমতা’ অন‍্যদিকে আপসহীন লড়াকুদের ঐক্যবদ্ধ শক্তি ‘জনতা’। পৃথিবীর তাবৎ ইতিহাসে রক্তঝরা সংগ্রাম পেরিয়ে শেষমেষ জনতারই জয় হয় এবং বাংলাদেশে জুলাই অভ্যুত্থানে সেটাই আবারও বাস্তব হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।