ঢাকা ০৫:২৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫, ৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
কালিয়াকৈরে রুমাইসা হাসপাতাল বন্ধের নির্দেশ বিজিবির নৌ-অভিযান: ৪০ হাজার ইয়াবাসহ ৩ রোহিঙ্গা আটক ধোপাখালীস্থ শশ্মানঘাটে কালীপূজোয় মেতে উঠেন সনাতন ধর্মের অনুসারীরা,পরিদর্শনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দরা টেকনাফের পাহাড়ে বিজিবির অভিযান, ৬ জিম্মি মুক্ত নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাবে আইআরআই সুপার ওভারে গড়াল টাইগারদের ম্যাচ অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে’ কাজ করার আহ্বান বিএনপির শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে যা বললেন প্রধান উপদেষ্টা অন্যায়ভাবে বাংলাদেশে এসে ভারতীয় জেলেদের মাছ ধরা বন্ধ করতে হবে সিদ্ধিরগঞ্জবাসীর আস্থার প্রতীক ট্রাস্ট হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক

মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে চলছে রূপগঞ্জ উপজেলা ভূমি অফিসের কার্যক্রম

  • প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০১:৩০:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫
  • ২৪ বার পড়া হয়েছে

রূপগঞ্জ নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে দুইশত বছরের পুরনো অতিঃ ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে রূপগঞ্জ উপজেলা ভূমি অফিসের কার্যক্রম। এতে ভুমি অফিসের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ভুমি সেবা নিতে আসা গ্রাহকরা রয়েছেন চরম নিরাপত্তাহীনতায়।

এদিকে ভবনটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনে হওয়ায় ইচ্ছে থাকা স্বত্তেও সংস্কার করতে পারছেন না স্থানীয় প্রশাসন। স্থানীয় সূত্র জানায়, ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে ভারত উপমহাদেশ বিভক্ত হওয়ার পর মুড়াপাড়ার জমিদার জগদীশ চন্দ্র তার পরিবার নিয়ে কলকাতা গমন করেন। এরপর থেকে জমিদার বাড়ি ও আশপাশের ভবনগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন সরকার মুল বাড়িটি দখল নেয়। এছাড়াও পাশের মঠের ঘাট এলাকায় থাকা জমিদার পরিবারের অপরবাড়িও দখলে নেয়। এখানে মুল বাড়িতে হাসপাতাল ও কিশোরী সংশোধন কেন্দ্রের কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দে এখানে স্কুল ও কলেজের কার্যক্রম পরিচালনা করা হত। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর উভয় বাড়ির দায়িত্ব গ্রহণ করে সেটিকে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা হিসেবে তালিকাভুক্ত করে। বর্তমানে ৬৫ একরের জমিদার বাড়িটি মুড়াপাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ নামে পরিচিত। এবং পাশের মঠের ঘাট এলাকার ভবনটিতে রূপগঞ্জ উপজেলা ভুমি অফিসের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। মূল জমিদার বাড়ির দ্বিতল ভবনে প্রায় ৯৫টি কক্ষ এবং মঠের ঘাটস্থ ভবনে আরো ১৭টি কক্ষ রয়েছে। বর্তমান দৃশ্যপট সম্পূর্ণ ভিন্ন। সম্প্রতি সেত্রাং নামীয় ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবে ভুমি অফিসের মুল ছাঁদ ধ্বসে পড়ার উপক্রম হয়েছে। ইতোমধ্যে একটি কক্ষের ছাঁদের প্লাস্টার খসে, কাঠ পঁচে পড়ে যাচ্ছে । এর পাশেই নিয়মিত কাজ করছেন ভুমি অফিসে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। শতশত সেবা গ্রহীতারাও ভির করছেন তাদের জমি সংক্রান্ত কাজের জন্য। এদিকে ভূমি অফিস সূত্র জানায়, গ্রাহকেরা অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান সুবিধার কারণে নাগরিক হয়রানি অনেক হ্রাস পেয়েছে। ফলে ভুমি অফিসে গ্রাহকেরা কম আসছেন, কিন্তু কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বাধ্য হয়েই এ ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে দায়িত্ব পালন করছেন।

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের নিচেই উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ ভূমি সংক্রান্ত কাজ যেমন খাজনা আদায়, নামজারি মিউটেশন ,মিস কেস ও ভ্রাম্যমান আদালত এবং বিভিন্ন সনদপত্র প্রদান মূলক কাজ চলছে। প্রতি বছরই ভবনটি সাময়িক মেরামত ও সংস্কার করা হলেও তা কিছুদিন পরেই আবার পূর্বের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ফিরে আসে ।

উপজেলা ভূমি অফিস থেকে শুরু করে উপজেলা পরিষদ এবং জেলা প্রশাসন পর্যন্ত সকলেই ভবনের এই বিপজ্জনক অবস্থা সম্পর্কে অবগত আছেন ।

বিভিন্ন সময়ে আলোচনা হলেও, তাৎক্ষণিকভাবে ভূমি অফিসের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিকল্প বা নতুন ভবন তৈরি করা সম্ভব হয়নি। বিভিন্ন সময় উপজেলা পরিষদের সভায় ভূমি অফিস ভবন সম্প্রসারণের জটিলতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যদিও বর্তমানে কোনো নির্দিষ্ট স্থানান্তরের তারিখ বা নতুন ভবন নির্মাণের সুস্পষ্ট অগ্রগতি দেখা যায়নি, তবে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমস্যা নিরসনের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। অতি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ভূমি সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ সরকারি নথিপত্র এবং রেকর্ডপত্র সংরক্ষিত থাকায় সেগুলোর স্থায়ীভাবে নষ্ট হয়ে যাওয়ার চরম ঝুঁকিও রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি থেকে কার্যক্রম স্থানান্তরের জন্য বা নতুন ভবন নির্মাণের জন্য দ্রুত কোনো সুস্পষ্ট সরকারি সিদ্ধান্ত বা কাজ শুরু হওয়া বা কো অগ্রগতির খবর পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন সময়ে উপজেলা পরিষদের মাসিক ও বাৎসরিক সভায় “ভূমি অফিস ভবন সম্প্রসারণে জটিলতার” কথা উল্লেখ করা হয়েছে এবং সমাধানের চেষ্টা চলছে বলে জানানো হয়েছিল। কিন্তু দুই শত বছরের পুরনো ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই বর্তমানে কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হচ্ছে, যা কর্মচারী ও সাধারণ মানুষের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। রূপগঞ্জ উপজেলা ভূমি অফিসকে বিভক্ত করে পূর্বাঞ্চল এবং দক্ষিণাঞ্চল নামে দুটি সহকারী কমিশনার (ভূমি) বা এসিল্যান্ড অফিস কে ভাগ করা হয়েছে । বিভক্তির পর নতুন সহকারী কমিশনার (ভূমি) যোগদান করেছেন।

রূপগঞ্জ উপজেলা ভূমি নাজির কাম কেশিয়ার মোঃ নাসির উদ্দীন বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জরাজীর্ণ ভবনে ভূমি সেবা দিয়ে যাচ্ছি আমরা। ২০০ বছরের পুরনো ভবনে চলছে ভূমির সেবার কার্যক্রম। আমরা দ্রুত সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি। আমাদের পাশের ভবনে একটা ছাদ ধ্বসে পড়েছে তারপরও আমাদের কার্যক্রম বন্ধ নেই।

রূপগঞ্জ উপজেলা ভূমি প্রধার সহকারী মোঃ মামুন হোসেন বলেন, আমরা যে ভবনটাতে সেবা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি সেটা ২০০ বছরের আগের পুরোনো ভবন। তারপরও আমাদের সেবা কার্যক্রম বন্ধ হয়নি গ্রাহকদের সেবা দেওয়ার জন্য আমরা ভবনের বাহিরে শুনানি করে থাকি। মৃত্যুর ঝুঁকি যেন আমরা এই পুরনো ভবনে সেবা কার্যক্রম করে যাচ্ছি। অল্প বৃষ্টি হলেই আমাদের ভবনের ভিতরে পানি জমে থাকে এবং ছাদ ভেঙ্গে প্লাস্টার খসে পড়ে যাচ্ছে।
কিছুদিন আগেও আমাদের পাশের একটি ভবন পড়ে গেছে। আমাদের আশেপাশে যারা সহকর্মী ছিল তাদেরকে অন্য ভবনে স্থানান্তর করা হয়েছে এবং ভবন সংকট থাকার কারণে আমাদের এই ভবনে সেবা দিয়ে যাচ্ছি। আমরা দ্রুত ভবন সংস্কার দাবি জানাচ্ছি।

রূপগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি তরিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে ভূমি অফিসে কার্যক্রম চলছে ২০০ বছরের পুরনো ভবনে। বর্তমানে এটি মুড়াপাড়া জমিদারের বাড়ি একটি অংশ আমি যখন অফিসে জয়েন করি তখন থেকে শুনে যাচ্ছি এটি খুব ঝুকিপূর্ণ ভবন। অল্প বৃষ্টিতেই পানি জমে যায় ভূমি অফিসের অভ্যন্তরে, সেবা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়।

কিছুদিন আগে পাশের ভবনের ছাদ ধ্বসে পড়ে গিয়েছে। আমরা ভূমি মন্ত্রণালয়ে সমস্যাটির জন্য আবেদন জানিয়েছি এবং উপজেলা প্রশাসন ও ভূমি মন্ত্রণালয় অবগত করেছি, আশা করছি আমরা নতুন একটি ভবন বরাদ্দ পাবো।

এবং উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নতুন একটি অস্থায়ী ছোট ভবন করে দিচ্ছে আমাদের টেম্পোরারি ভাবে। আমরা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে কে জানিয়েছি তারাও আমাদেরকে আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু ভবনটি বরাদ্দ দিতে দেরি হওয়ায় আমাদের জীবন ঝুকিয়ে মুখে পড়ে আছে। আমরা চাই অতি দ্রুত সংস্কার করা হোক আমাদের জীবনের নিরাপত্তার জন্য।

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

জনপ্রিয় সংবাদ

কালিয়াকৈরে রুমাইসা হাসপাতাল বন্ধের নির্দেশ

মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে চলছে রূপগঞ্জ উপজেলা ভূমি অফিসের কার্যক্রম

আপডেট সময় : ০১:৩০:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

রূপগঞ্জ নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে দুইশত বছরের পুরনো অতিঃ ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে রূপগঞ্জ উপজেলা ভূমি অফিসের কার্যক্রম। এতে ভুমি অফিসের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ভুমি সেবা নিতে আসা গ্রাহকরা রয়েছেন চরম নিরাপত্তাহীনতায়।

এদিকে ভবনটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনে হওয়ায় ইচ্ছে থাকা স্বত্তেও সংস্কার করতে পারছেন না স্থানীয় প্রশাসন। স্থানীয় সূত্র জানায়, ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে ভারত উপমহাদেশ বিভক্ত হওয়ার পর মুড়াপাড়ার জমিদার জগদীশ চন্দ্র তার পরিবার নিয়ে কলকাতা গমন করেন। এরপর থেকে জমিদার বাড়ি ও আশপাশের ভবনগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন সরকার মুল বাড়িটি দখল নেয়। এছাড়াও পাশের মঠের ঘাট এলাকায় থাকা জমিদার পরিবারের অপরবাড়িও দখলে নেয়। এখানে মুল বাড়িতে হাসপাতাল ও কিশোরী সংশোধন কেন্দ্রের কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দে এখানে স্কুল ও কলেজের কার্যক্রম পরিচালনা করা হত। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর উভয় বাড়ির দায়িত্ব গ্রহণ করে সেটিকে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা হিসেবে তালিকাভুক্ত করে। বর্তমানে ৬৫ একরের জমিদার বাড়িটি মুড়াপাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ নামে পরিচিত। এবং পাশের মঠের ঘাট এলাকার ভবনটিতে রূপগঞ্জ উপজেলা ভুমি অফিসের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। মূল জমিদার বাড়ির দ্বিতল ভবনে প্রায় ৯৫টি কক্ষ এবং মঠের ঘাটস্থ ভবনে আরো ১৭টি কক্ষ রয়েছে। বর্তমান দৃশ্যপট সম্পূর্ণ ভিন্ন। সম্প্রতি সেত্রাং নামীয় ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবে ভুমি অফিসের মুল ছাঁদ ধ্বসে পড়ার উপক্রম হয়েছে। ইতোমধ্যে একটি কক্ষের ছাঁদের প্লাস্টার খসে, কাঠ পঁচে পড়ে যাচ্ছে । এর পাশেই নিয়মিত কাজ করছেন ভুমি অফিসে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। শতশত সেবা গ্রহীতারাও ভির করছেন তাদের জমি সংক্রান্ত কাজের জন্য। এদিকে ভূমি অফিস সূত্র জানায়, গ্রাহকেরা অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান সুবিধার কারণে নাগরিক হয়রানি অনেক হ্রাস পেয়েছে। ফলে ভুমি অফিসে গ্রাহকেরা কম আসছেন, কিন্তু কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বাধ্য হয়েই এ ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে দায়িত্ব পালন করছেন।

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের নিচেই উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ ভূমি সংক্রান্ত কাজ যেমন খাজনা আদায়, নামজারি মিউটেশন ,মিস কেস ও ভ্রাম্যমান আদালত এবং বিভিন্ন সনদপত্র প্রদান মূলক কাজ চলছে। প্রতি বছরই ভবনটি সাময়িক মেরামত ও সংস্কার করা হলেও তা কিছুদিন পরেই আবার পূর্বের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ফিরে আসে ।

উপজেলা ভূমি অফিস থেকে শুরু করে উপজেলা পরিষদ এবং জেলা প্রশাসন পর্যন্ত সকলেই ভবনের এই বিপজ্জনক অবস্থা সম্পর্কে অবগত আছেন ।

বিভিন্ন সময়ে আলোচনা হলেও, তাৎক্ষণিকভাবে ভূমি অফিসের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিকল্প বা নতুন ভবন তৈরি করা সম্ভব হয়নি। বিভিন্ন সময় উপজেলা পরিষদের সভায় ভূমি অফিস ভবন সম্প্রসারণের জটিলতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যদিও বর্তমানে কোনো নির্দিষ্ট স্থানান্তরের তারিখ বা নতুন ভবন নির্মাণের সুস্পষ্ট অগ্রগতি দেখা যায়নি, তবে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমস্যা নিরসনের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। অতি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ভূমি সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ সরকারি নথিপত্র এবং রেকর্ডপত্র সংরক্ষিত থাকায় সেগুলোর স্থায়ীভাবে নষ্ট হয়ে যাওয়ার চরম ঝুঁকিও রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি থেকে কার্যক্রম স্থানান্তরের জন্য বা নতুন ভবন নির্মাণের জন্য দ্রুত কোনো সুস্পষ্ট সরকারি সিদ্ধান্ত বা কাজ শুরু হওয়া বা কো অগ্রগতির খবর পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন সময়ে উপজেলা পরিষদের মাসিক ও বাৎসরিক সভায় “ভূমি অফিস ভবন সম্প্রসারণে জটিলতার” কথা উল্লেখ করা হয়েছে এবং সমাধানের চেষ্টা চলছে বলে জানানো হয়েছিল। কিন্তু দুই শত বছরের পুরনো ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই বর্তমানে কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হচ্ছে, যা কর্মচারী ও সাধারণ মানুষের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। রূপগঞ্জ উপজেলা ভূমি অফিসকে বিভক্ত করে পূর্বাঞ্চল এবং দক্ষিণাঞ্চল নামে দুটি সহকারী কমিশনার (ভূমি) বা এসিল্যান্ড অফিস কে ভাগ করা হয়েছে । বিভক্তির পর নতুন সহকারী কমিশনার (ভূমি) যোগদান করেছেন।

রূপগঞ্জ উপজেলা ভূমি নাজির কাম কেশিয়ার মোঃ নাসির উদ্দীন বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জরাজীর্ণ ভবনে ভূমি সেবা দিয়ে যাচ্ছি আমরা। ২০০ বছরের পুরনো ভবনে চলছে ভূমির সেবার কার্যক্রম। আমরা দ্রুত সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি। আমাদের পাশের ভবনে একটা ছাদ ধ্বসে পড়েছে তারপরও আমাদের কার্যক্রম বন্ধ নেই।

রূপগঞ্জ উপজেলা ভূমি প্রধার সহকারী মোঃ মামুন হোসেন বলেন, আমরা যে ভবনটাতে সেবা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি সেটা ২০০ বছরের আগের পুরোনো ভবন। তারপরও আমাদের সেবা কার্যক্রম বন্ধ হয়নি গ্রাহকদের সেবা দেওয়ার জন্য আমরা ভবনের বাহিরে শুনানি করে থাকি। মৃত্যুর ঝুঁকি যেন আমরা এই পুরনো ভবনে সেবা কার্যক্রম করে যাচ্ছি। অল্প বৃষ্টি হলেই আমাদের ভবনের ভিতরে পানি জমে থাকে এবং ছাদ ভেঙ্গে প্লাস্টার খসে পড়ে যাচ্ছে।
কিছুদিন আগেও আমাদের পাশের একটি ভবন পড়ে গেছে। আমাদের আশেপাশে যারা সহকর্মী ছিল তাদেরকে অন্য ভবনে স্থানান্তর করা হয়েছে এবং ভবন সংকট থাকার কারণে আমাদের এই ভবনে সেবা দিয়ে যাচ্ছি। আমরা দ্রুত ভবন সংস্কার দাবি জানাচ্ছি।

রূপগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি তরিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে ভূমি অফিসে কার্যক্রম চলছে ২০০ বছরের পুরনো ভবনে। বর্তমানে এটি মুড়াপাড়া জমিদারের বাড়ি একটি অংশ আমি যখন অফিসে জয়েন করি তখন থেকে শুনে যাচ্ছি এটি খুব ঝুকিপূর্ণ ভবন। অল্প বৃষ্টিতেই পানি জমে যায় ভূমি অফিসের অভ্যন্তরে, সেবা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়।

কিছুদিন আগে পাশের ভবনের ছাদ ধ্বসে পড়ে গিয়েছে। আমরা ভূমি মন্ত্রণালয়ে সমস্যাটির জন্য আবেদন জানিয়েছি এবং উপজেলা প্রশাসন ও ভূমি মন্ত্রণালয় অবগত করেছি, আশা করছি আমরা নতুন একটি ভবন বরাদ্দ পাবো।

এবং উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নতুন একটি অস্থায়ী ছোট ভবন করে দিচ্ছে আমাদের টেম্পোরারি ভাবে। আমরা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে কে জানিয়েছি তারাও আমাদেরকে আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু ভবনটি বরাদ্দ দিতে দেরি হওয়ায় আমাদের জীবন ঝুকিয়ে মুখে পড়ে আছে। আমরা চাই অতি দ্রুত সংস্কার করা হোক আমাদের জীবনের নিরাপত্তার জন্য।