নিজস্ব প্রতিবেদক: বৈশ্বিক ফ্যাশন শিল্পে টেকসই সাপ্লাই চেইন গড়ে তুলতে অংশীদারিত্ব জোরদারে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) এবং ব্র্যান্ড ফোরামের মধ্যে আজ এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) উত্তরাস্থ বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে এ বৈঠক হয়েছে।
এই বৈঠকটির মূল লক্ষ্য ছিল পোশাক শিল্পের ভবিষ্যৎ অংশীদারিত্বমূলক কৌশল এবং টেকসই উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাওয়া।
৩০ বছর পর মাতারবাড়ী-মহেশখালীকে সাংহাই-সিঙ্গাপুরের মতো দেখতে চাই
যেকোনো ধরনের অস্থিতিশীলতা বিনিয়োগের গতিকে স্লো করে দিতে পারে
বৈঠকে বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খানের নেতৃত্বে সংগঠটির পক্ষে আলোচনায় অংশ নেন প্রথম সহ-সভাপতি সেলিম রহমান, সহ-সভাপতি মো. রেজোয়ান সেলিম, সহ-সভাপতি (অর্থ) মিজানুর রহমান, সহ-সভাপতি ভিদিয়া অমৃত খান, সহ-সভাপতি মো. শিহাব উদ্দোজা চৌধুরী, পরিচালক শাহ রাঈদ চৌধুরী, পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুর রহিম প্রমুখ।
অন্যদিকে বায়ার্স ফোরাম থেকে ৪০টিরও বেশি ব্র্যান্ডের প্রতিনিধিরা বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।
বৈঠকে আলোচনার মধ্যে ছিলো পোশাক শিল্পের জন্য বাংলাদেশের পণ্যের উপর যুক্তরাষ্ট্রের ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ, সমন্বিত আচরণ বিধি প্রবর্তন, পণ্য বৈচিত্র্যকরণ, শ্রম সংস্কার, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, বাংলাদেশের এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের প্রস্তুতি, জিএসপি প্লাস থ্রেশহোল্ডের চ্যালেঞ্জসহ প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন বিষয়।
ব্র্যান্ড প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে টেকসই সাপ্লাই চেইন নিশ্চিত করতে লজিস্টিক উন্নয়ন, এনবিআর ও কাস্টমস বিষযক জটিলতাগুলো নিরসন, টেকসই ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন শ্রম পরিবেশ তৈরি এবং পরিবেশগত সাসটেইনেবিলিটির উপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে বিজিএমইএ এর অন্যতম এজেন্ডা ছিলো পোশাক শিল্পের জন্য একটি সমন্বিত আচরণ বিধি প্রণয়নে পোশাক ব্র্যান্ডগুলোর সহযোগিতা ও সমর্থন পাওয়া, যা সাপ্লাই চেইনে সকল অংশীদারদের উপকৃত করবে। বিজিএমইএর পরিচালক নাফিস- উদ- দৌলা একটি পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে দেখান একটি সমন্বিত আচরণ বিধি কীভাবে নিরীক্ষা প্রক্রিয়া সহজতর করে, কারখানার উপর চাপ কমিয়ে শিল্পকে আরও নৈতিক, টেকসই এবং দায়িত্বশীল করে তুলতে পারে।
এছাড়া আলোচনায় শ্রম সংস্কার বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পায়। বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাংলাদেশে শ্রম সংস্কারের সাম্প্রতিক অগ্রগ্রতি তুলে ধরে বলেন, ‘এই সংস্কারগুলো শুধু আন্তর্জাতিক মানদণ্ড পূরণের জন্যই নয় বরং একটি টেকসই ও নিরাপদ শিল্প পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য করা হচ্ছে।’
তিনি ব্র্যান্ডগুলোকে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের এই ইতিবাচক পরিবর্তনে অংশীদার হিসেবে কাজ করার আহ্বান জানান।
বৈঠকে বিজিএমইএ নেতারা বাংলাদেশ থেকে পোশাক সোর্সিং বৃদ্ধি করা এবং আরও উদ্ভাবনী উচ্চমানের পণ্য উৎপাদনে বাংলাদেশে সরবরাহকারীদের সঙ্গে অংশীদারিত্ব জোরদার করার জন্য ব্র্যান্ডগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।
বায়ার্স ফোরামের প্রতিনিধিরা বলেন, ‘শিল্পে ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ের মাধ্যমে প্রবৃদ্ধির বিশাল সুযোগ রয়েছে।’ তারা বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি’তে (বিইউএফটি) টেকনিক্যাল ডিজাইন সেকশন খোলা এবং কারখানা পর্যায়ে তরুন ফ্যাশন ডিজাইনারদের নিয়োগ দেয়ার জন্য পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, ‘এটি বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিকারকদের কাছে ব্যান্ডগুলোর অন্যতম প্রত্যাশা।’
বিজিএমইএ নেতারা পোশাক শিল্পকে আরও প্রতিযোগিতামূলক এবং নৈতিকভাবে শক্তিশালী করার জন্য শিল্পে বেটার প্রাইসিং মডেল, ইফিশিয়েন্সি মডেল প্রনয়নসহ শিল্পের প্রতিটি ক্ষেত্রে উদ্যোক্তাদের পাশে এগিয়ে আসার জন্য পোশাক ব্র্যান্ডগুলোকে আহ্বান জানিয়েছেন।
বৈঠকে উপস্থিত পোশাক ব্র্যান্ডগুলোর প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের উন্নয়নে তাদের অব্যাহত সমর্থনের বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন।