ঢাকা ০১:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
টেকনাফ উপজেলা প্রেসক্লাবের জরুরি সভা অনুষ্ঠিত চাঁপাইনবাবগঞ্জে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উদযাপন শিক্ষার্থীর পূর্ণাঙ্গ বিকাশে শিক্ষার পাশাপাশি ক্রীড়া চর্চা অপরিহার্য :প্রধান উপদেষ্টা ৫০০ বছরে প্রথম, পোপের সঙ্গে প্রার্থনায় অংশ নেবেন ব্রিটিশ রাজা বাবা হয়েছেন জেমস, জানালেন নতুন বিয়ের খবর প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেছে এনসিপির চার নেতা নির্বাচনের আগে অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ ভ্রান্ত তথ্য : প্রধান উপদেষ্টা ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য ৬০ ঘণ্টা প্রশিক্ষণ নিতে হবে, মিলবে ভাতা রূপগঞ্জে নিরাপদ সড়ক দিবস-২০২৫ অনুষ্ঠিত টেকনাফে সশস্ত্র দুর্বৃত্তদের কবল থেকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী ও অটোরিকশা উদ্ধার

গোপালগঞ্জে গ্রাম আদালত কার্যক্রমের বার্ষিক অগ্রগতি পর্যালোচনা ও করণীয় শীর্ষক সভা অনুষ্ঠিত

  • প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:৫৪:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ১৪৯ বার পড়া হয়েছে

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি :গোপালগঞ্জ জেলা পর্যায়ে গ্রাম আদালত কার্যক্রমের বার্ষিক অগ্রগতি পর্যালোচনা ও করণীয় শীর্ষক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় জেলা পৌর মিলনায়তনের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এবং বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ ৩য় পর্যায় প্রকল্প, স্থানীয় সরকার বিভাগ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, ইউএনডিপি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় এ সভার আয়োজন করা হয়।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান। সভাপতিত্ব করেন বিশ্বজিত কুমার পাল, উপপরিচালক, স্থানীয় সরকার।

জেলা প্রশাসক তার বক্তব্যে বলেন, জনপ্রতিনিধিদের মূল দায়িত্ব হলো সাধারণ জনগণকে বিচারিক সুবিধা প্রদান করা। যেহেতু গ্রাম আদালত সর্বোচ্চ ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিরোধ নিষ্পত্তি করতে পারে, তাই ছোটখাটো বিরোধগুলো এই আদালতের মাধ্যমে সমাধান করতে হবে। তবে এখতিয়ারভুক্ত নয় এমন মামলা গ্রাম আদালতে নিষ্পত্তি করা যাবে না। তিনি আরও বলেন, কিছু ইউনিয়নে গ্রাম আদালতের কার্যক্রম ভালো হলেও কিছু ইউনিয়নে তা সন্তোষজনক নয়। মামলা গ্রহণ ও নিষ্পত্তির হার বাড়াতে হবে এবং গোপালগঞ্জ জেলা যেন সারা দেশের মধ্যে অগ্রগণ্য হয়, সে জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

সভায় উপপরিচালক (স্থানীয় সরকার) বিশ্বজিত কুমার পাল বলেন, অনেক ইউনিয়নে এখতিয়ারভুক্ত মামলা সালিশের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়, ফলে মামলা গ্রহণ ও নিষ্পত্তির হার কম থাকে। সপ্তাহে অন্তত একদিন গ্রাম আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা করলে সাধারণ মানুষের আস্থা বাড়বে। ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন সভায় গ্রাম আদালতের এজেন্ডা রাখার পাশাপাশি ওয়ার্ড সভায়ও প্রচার করতে হবে। গ্রাম আদালতের পাঁচটি রেজিস্টার সঠিকভাবে ব্যবহার করার নির্দেশ দেন তিনি।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফারিয়া তানজিন বলেন, যে ইউনিয়ন পরিষদে মামলা নিষ্পত্তির হার বেশি, তাদের কাছ থেকে অভিজ্ঞতা নিয়ে অন্য ইউনিয়ন পরিষদগুলোকেও সেভাবে কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। পাশাপাশি প্রচার-প্রচারণা বাড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ সরোয়ার হোসেন বলেন, গ্রাম আদালতের সঠিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হলে উচ্চ আদালতের মামলা জট ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যাবে। এতে সাধারণ মানুষ হয়রানি ছাড়াই বিচার পেতে সক্ষম হবে।

এ সময় মোঃ আলিউল হাসানাত খান, জেলা ম্যানেজার (এভিসিবি-৩ প্রকল্প), পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনার মাধ্যমে বিগত এক বছরের মাঠপর্যায়ের কার্যক্রম তুলে ধরেন। তিনি জানান, ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত জেলায় মোট ৭৭১টি মামলা দায়ের হয়েছে। এর মধ্যে উচ্চ আদালত থেকে ৮০টি মামলা গ্রাম আদালতে প্রেরিত হয় এবং ৬৯৭টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। এসব মামলার মাধ্যমে ৯০ লাখ ৬৮ হাজার ৭২০ টাকা আদায় হয়েছে।

ওয়েভ ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি ও প্রকল্প সমন্বয়কারী নজরুল ইসলাম বলেন, গ্রাম আদালতের কার্যক্রমকে স্থায়ী রূপ দিতে বিভাগ, জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে আলাদা ডেস্ক থাকতে হবে। ডিআরটি ও ইউআরটি সদস্যদের আরও সক্রিয়ভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

সভায় বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা গ্রাম আদালতকে আরও সফল করার লক্ষ্যে প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন। গত এক বছরে মামলা গ্রহণে প্রথম স্থান অধিকার করেছে কাশিয়ানী উপজেলার ফুকরা ইউনিয়ন পরিষদ, দ্বিতীয় স্থান কাশিয়ানী উপজেলার সাজাইল ইউনিয়ন পরিষদ এবং তৃতীয় স্থান কোটালীপাড়া উপজেলার বান্ধাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ। ভালো কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ এ তিনটি ইউনিয়ন পরিষদকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান করা হয়।

সভাটি সঞ্চালনা করেন সহকারী কমিশনার (স্থানীয় সরকার) এস এম আমিরুল মোস্তফা।
উক্ত সভায় জেলার ৫টি উপজেলার ইউএনও, ডিআরটি সদস্য এবং ৬৭টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান/প্যানেল চেয়ারম্যানসহ প্রায় ৯০ জন অংশগ্রহণ করেন।

ট্যাগস :

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

জনপ্রিয় সংবাদ

টেকনাফ উপজেলা প্রেসক্লাবের জরুরি সভা অনুষ্ঠিত

গোপালগঞ্জে গ্রাম আদালত কার্যক্রমের বার্ষিক অগ্রগতি পর্যালোচনা ও করণীয় শীর্ষক সভা অনুষ্ঠিত

আপডেট সময় : ০৭:৫৪:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি :গোপালগঞ্জ জেলা পর্যায়ে গ্রাম আদালত কার্যক্রমের বার্ষিক অগ্রগতি পর্যালোচনা ও করণীয় শীর্ষক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় জেলা পৌর মিলনায়তনের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এবং বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ ৩য় পর্যায় প্রকল্প, স্থানীয় সরকার বিভাগ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, ইউএনডিপি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় এ সভার আয়োজন করা হয়।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান। সভাপতিত্ব করেন বিশ্বজিত কুমার পাল, উপপরিচালক, স্থানীয় সরকার।

জেলা প্রশাসক তার বক্তব্যে বলেন, জনপ্রতিনিধিদের মূল দায়িত্ব হলো সাধারণ জনগণকে বিচারিক সুবিধা প্রদান করা। যেহেতু গ্রাম আদালত সর্বোচ্চ ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিরোধ নিষ্পত্তি করতে পারে, তাই ছোটখাটো বিরোধগুলো এই আদালতের মাধ্যমে সমাধান করতে হবে। তবে এখতিয়ারভুক্ত নয় এমন মামলা গ্রাম আদালতে নিষ্পত্তি করা যাবে না। তিনি আরও বলেন, কিছু ইউনিয়নে গ্রাম আদালতের কার্যক্রম ভালো হলেও কিছু ইউনিয়নে তা সন্তোষজনক নয়। মামলা গ্রহণ ও নিষ্পত্তির হার বাড়াতে হবে এবং গোপালগঞ্জ জেলা যেন সারা দেশের মধ্যে অগ্রগণ্য হয়, সে জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

সভায় উপপরিচালক (স্থানীয় সরকার) বিশ্বজিত কুমার পাল বলেন, অনেক ইউনিয়নে এখতিয়ারভুক্ত মামলা সালিশের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়, ফলে মামলা গ্রহণ ও নিষ্পত্তির হার কম থাকে। সপ্তাহে অন্তত একদিন গ্রাম আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা করলে সাধারণ মানুষের আস্থা বাড়বে। ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন সভায় গ্রাম আদালতের এজেন্ডা রাখার পাশাপাশি ওয়ার্ড সভায়ও প্রচার করতে হবে। গ্রাম আদালতের পাঁচটি রেজিস্টার সঠিকভাবে ব্যবহার করার নির্দেশ দেন তিনি।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফারিয়া তানজিন বলেন, যে ইউনিয়ন পরিষদে মামলা নিষ্পত্তির হার বেশি, তাদের কাছ থেকে অভিজ্ঞতা নিয়ে অন্য ইউনিয়ন পরিষদগুলোকেও সেভাবে কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। পাশাপাশি প্রচার-প্রচারণা বাড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ সরোয়ার হোসেন বলেন, গ্রাম আদালতের সঠিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হলে উচ্চ আদালতের মামলা জট ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যাবে। এতে সাধারণ মানুষ হয়রানি ছাড়াই বিচার পেতে সক্ষম হবে।

এ সময় মোঃ আলিউল হাসানাত খান, জেলা ম্যানেজার (এভিসিবি-৩ প্রকল্প), পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনার মাধ্যমে বিগত এক বছরের মাঠপর্যায়ের কার্যক্রম তুলে ধরেন। তিনি জানান, ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত জেলায় মোট ৭৭১টি মামলা দায়ের হয়েছে। এর মধ্যে উচ্চ আদালত থেকে ৮০টি মামলা গ্রাম আদালতে প্রেরিত হয় এবং ৬৯৭টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। এসব মামলার মাধ্যমে ৯০ লাখ ৬৮ হাজার ৭২০ টাকা আদায় হয়েছে।

ওয়েভ ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি ও প্রকল্প সমন্বয়কারী নজরুল ইসলাম বলেন, গ্রাম আদালতের কার্যক্রমকে স্থায়ী রূপ দিতে বিভাগ, জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে আলাদা ডেস্ক থাকতে হবে। ডিআরটি ও ইউআরটি সদস্যদের আরও সক্রিয়ভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

সভায় বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা গ্রাম আদালতকে আরও সফল করার লক্ষ্যে প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন। গত এক বছরে মামলা গ্রহণে প্রথম স্থান অধিকার করেছে কাশিয়ানী উপজেলার ফুকরা ইউনিয়ন পরিষদ, দ্বিতীয় স্থান কাশিয়ানী উপজেলার সাজাইল ইউনিয়ন পরিষদ এবং তৃতীয় স্থান কোটালীপাড়া উপজেলার বান্ধাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ। ভালো কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ এ তিনটি ইউনিয়ন পরিষদকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান করা হয়।

সভাটি সঞ্চালনা করেন সহকারী কমিশনার (স্থানীয় সরকার) এস এম আমিরুল মোস্তফা।
উক্ত সভায় জেলার ৫টি উপজেলার ইউএনও, ডিআরটি সদস্য এবং ৬৭টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান/প্যানেল চেয়ারম্যানসহ প্রায় ৯০ জন অংশগ্রহণ করেন।